আজ পহেলা মোহাররম

বিজয়বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত ২১, জুলাই, ২০২৩, শুক্রবার
আজ পহেলা মোহাররম

মাও, নোমান বিন আজিম

আজ ১লা মুহার্রম আরবী বৎসর বা হিজরীর ১ম দিন।
মুহার্রম মাস ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস,যাকে হারাম মাসও বলা হয়ে থাকে।
আইয়ামে জাহেলিয়্যাতের যুগেও এ মাসটিকে অত্যন্ত সম্মান বা মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখা হতো,যারফলে ঝগড়া বিবাদ ও মারামারি সহ যুদ্ধবিগ্রহ থেকেও এ মাসে তারা বিরত থাকত!
এ মাসের ১০ম দিনকে আশুরা বলা হয়,এদিনের সঙ্গে ইসলামের ঐতিহাসিক অনেক ঘটনাবলি জড়িত।
বলা হয়ে থাকে এ দিনে হজরত আদম আঃ পৃথিবীতে আগমন করে ছিলেন,হজরত নূহ আঃ প্লাবন থেকে মুক্তি ও হজরত মূসা আঃ ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার হয়ে ছিলেন,ফেরাউনও তার সৈন্যসামন্ত সহ পানিতে ডুবে মরেছিল!
এদিনেই কিয়ামত সংগঠিত হওয়ার বর্ণনাও পাওয়া যায়!
সর্ব শেষে বিশ্বনবী সরওয়ারে দু’আলম হজরত মুহাম্মাদ সঃ এর নাতি ইমাম হুসাইন রাঃ কারবালার ময়দানে নিজ পরিবারের সবাইকে নিয়ে শাহাদাত বরণ করে ছিলেন।
আশুরার দিনে নফল সিয়াম পালন করা,কুরআন তেলাওয়াত ও ইবাদাত বন্দগি করার নির্দেশনা রয়েছে।
তবে আমাদের দেশে যেভাবে আরম্বর ভাবে বিদয়াতি কাজ করা হয় যেমন-আলোক সজ্জা,তাজিয়া সহকারে মিছিল,ঢোল,তবলা,ছুরিচাকু সহকারে নিজ গায়ে রক্ত প্রবাহিত করে মাতম করা,হায় হুসাইন বলে কান্নাকাটি করে ছাতম করা,বিশেষ ধরণের পোষাক পরে নাচানাচি করা ইত্যাদি কাজ সমূহ গর্হিত।
সবচেয়ে আর্শ্চয্য বিষয় হলো নবী দৌহিত্র ইমাম হুসাইন রাঃ যে কারণে এজিদি শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এবং আহলে বায়েতদেরকে নিয়ে এজিদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রানপণ লড়াই করে শাহাদাত বরণ করেছিলেন,সে বিষয়টি আজ গোপনীয়।
আমরা যেন জেনেও তা জানিনা এবং জানার চেষ্টাও করিন।
মসজিদ সমূহে খতিবগণ ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের বর্ণনা করে চোখের পানি ফেলছেন,কিন্তু কোন্ কারণে ইমাম শহীদ হয়েছেন তা জনগণকে জানিয়ে দিচ্ছেন না!
প্রকৃতপক্ষে ইমাম হুসাইন রাঃ ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠন করার দাবী জানিয়ে ছিলেন,যাহা খুলাফায়ে রাশেদার নীতি ছিল।
কিন্তু এজিদি শাসন তথা মুয়াবিয়া (রাঃ) এর মনোনীত প্রথার বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নিয়েছিলেন এবং এজিদের আনুগত্য করতে অস্বীকার করেছিলেন!
যার ফলে ইমাম হুসাইন (রাঃ)কে এজিদের আনুগত্য তথা বাইয়াত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করায়,নিজ নিরাপত্তার জন্য তিনি মদিনা থেকে কূফায় আগমন করেছিলেন।
কূফার লোকেরা ইতিমধ্যে ইমামকে চলে আসার জন্য আহবান করেছিলেন এবং জীবন দিয়ে হলেও ইমামের সাথে থাকার জন্য তারা ওয়াদাও করেছিল!
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কূফাবাসীরা এজিদের ভয়ে ইমামকে একা ফেলে চলে যায় এবং ইমামের বিরুদ্ধে এজিদের পক্ষে তলোয়ার ধরতে বাধ্য হয়!
আজও যারা ইমামের জন্য মায়াকান্না করছেন এবং বাহ্যিক শোক প্রকাশ করে চলেছেন,উনারাও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং অধিকাংশ জনগণের মতামতের বাহিরে অবস্থান নিয়েছেন।
সুতরাং এহেন প্রতারণা ও নবী দৌহিত্রের আদর্শ বিরোধী অবস্থান নিয়ে এমন মায়াকান্না করার কি আদৌ কোন প্রয়োজন আছে?
আল্লাহ ও রাসুল সঃ কি এমন কার্যকলাপে খূশী হবেন? না রাগাম্বিত হবেন?
আল্লাহ সুবহানু তায়া’লা আমাদেরকে সঠিক ইতিহাস ও বিষয়গুলি জেনে এবং অনুধাবণ করে আ’মল বা কাজ করার তৌফিক দিন,আমীন।

শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন