দেশ-বিদেশে চিকিৎসা চিকিৎসা সেবা ও গবেষণায় বর্তমানে অনন্য এক নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। উচ্চতর মেডিকেল শিক্ষাতেও রয়েছে বিরাট অবদান।
বিএসএমএমইউ প্রতিষ্ঠা: ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠিত তৎকালীন আইপিজিএমএন্ডআরকে গবেষণা করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন।
তিনি স্নাতকোত্তর শিক্ষার ক্ষেত্রে আইপিজিএমএন্ডআরকে (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে শাহবাগে স্থানান্তর করা হয় তখন শয্যা সংখ্যা ছিলো ৩০০। বঙ্গবন্ধু শয্যা সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করেন।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৮ অক্টোবর তৎকালীন আইপিজিএমএন্ডআরে কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের উদ্বোধন করেন।
জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। বাস্তবেই বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসাসেবার আশা-ভরসা ও আস্থার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। বিএসএমএমইউ আজ শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা উপ-মহাদেশের সবচাইতে বড় হাসপাতাল ও চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিএসএমএমইউ আজ এদেশের চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় সাফল্যের ক্ষেত্রে এক অনন্য নাম।
চিকিৎসা শিক্ষা:
তৎকালীন আইপিজিএমএন্ডআরের যাত্রা শুরু হয়েছিল ৭টি কোর্স দিয়ে। বর্তমানে বিএসএমএমইউতে এমডি, এমএস, এমপিএইচ, এমফিল, ডিপ্লোমাসহ পোস্ট গ্রাজুয়েট বিষয়ের সংখ্যা প্রায় শতক পূর্ণ করেছে। রেসিডেন্সি কোর্সের সংখ্যাও ষাটের বেশি। অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজ ও ইন্সটিটিউটের সংখ্যা ৫৩টি। অনুষদের সংখ্যা ৭টি।
বিভাগের সংখ্যা ৫৬টি। রয়েছে ইনস্টিটিউট অফ পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে ৮ শতাধিক ছাত্রছাত্রী ভর্তি হচ্ছেন এবং প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত থাকছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস।
দেশের শিক্ষার্থী ছাড়াও নেপাল, ভারত, সোমালিয়া, ইরান, কানাডা, মালদ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া ও ভূটানসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
করোনাসহ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা:
বর্তমানে বিএসএমএমইউ গবেষণা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। প্রতি বছর শিক্ষক, শিক্ষার্থীকে গবেষণা মঞ্জুরি প্রদান করা হচ্ছে। গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইম্পিরিয়াল কলেজ অব লন্ডন, ভারতের মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল সেন্টার, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড হসপিস এন্ড প্যালিয়েটিভ কেয়ার অ্যালায়েন্স, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, রকফেলার ফাউন্ডেশন, জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, দেশীয়, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টে নির্ধারণে ও টিকার কার্যকারিতা নিশ্চিত হতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিশ্বমানের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ এর যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে।
বিজয় বাংলা/এনএ/৪/৫/২২